
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৫ অক্টোবর: এবার কর্তব্যে অবহেলার কারণে, রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল খড়্গপুরে! খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের (Kharagpur Sub Divisional Hospital) কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী তথা চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে সঠিকভাবে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে, মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিজনের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর পৌরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাঁজোয়াল এলাকার বাসিন্দা সনাতন দাস নামে সত্তরোর্ধ্ব এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। তারপরই, আজ সকাল থেকে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিজনেরা।
মৃতের ছেলে সঞ্জীব দাস জানিয়েছেন, “বুকে কফ জমে যাওয়ার কারণে এবং হাঁটাচলা ধীরে ধীরে করছিল, সেই কারণেই আমরা ভয় পেয়ে গতকাল (রবিবার) দুপুর ১টা-১.৩০ টা নাগাদ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল এবং সেলাইনও আস্তে আস্তে চলছিল। সন্ধ্যার সময় হঠাৎ লক্ষ্য করলাম, অক্সিজেন হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে! গায়ে হাত দিলাম গা ঠান্ডা, কাঁপছে! আমি গিয়ে সিস্টারকে ডাকি। এ তাকে বলছে, সে একে বলছে। কেউ এলোনা দেখতে। তারপর বলল ডাক্তারবাবুকে ডাকছি। ডাক্তারবাবু এসে কোনরকমে দূর থেকে দেখে মৃত ঘোষণা করলেন। অক্সিজেনের অভাবেই শ্বাস বন্ধ হয়ে বাবা মারা গেছেন। আমি যখন ডাকছিলাম সেই সময়ই নার্স ছুটে এসে অক্সিজেন চালু করলে বাবা বেঁচে যেতেন! হাসপাতালে গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হল।” মৃত সনাতন দাসের বৌমা তথা সঞ্জীব দাসের স্ত্রী পাপিয়া দাস বললেন, “নার্সদের বার বার ডাকা হয়েছে। কালকে যখন থেকে ভর্তি করা হয়েছে, কোন ডাক্তার দেখতে আসেননি! আপনাদের উদ্দেশ্য যদি চিকিৎসা না করার ছিল, আপনারা বলে দিতে পারতেন, এই রোগী রাখতে পারব না! বাড়ির লোক ডাকছে অক্সিজেন শেষ হয়ে গেছে বলে, আর ওনারা ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ করছেন। আমাদের রোগী তখন কাঁপছে! ওনাদের গাফিলতিতেই মৃত্যু হল। বাড়িতে ভাত খেয়ে সুস্থ ভাবে এলেন, ইমারজেন্সি থেকে হেঁটে গেছেন। সবই ঠিকঠাক ছিল। বিনাচিকিৎসায় মেরে ফেলল! অক্সিজেন চেঞ্জ করে দিলেই বাবা বেঁচে যেতেন।” মৃতের পরিবার আজ এই অভিযোগ করে, মৃতদেহ সামনে রেখে, বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ এসে তাঁদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠান। খড়্গপুর মহকুমার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) ডাঃ দেবাশীষ পাল বলেন, “ওনারা লিখিতভাবে অভিযোগ করলে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা গাফিলতির বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।”