এগারো মাসের লড়াই শেষে ‘কোভিড শূণ্য’ দিন দেখল পশ্চিম মেদিনীপুর, ভ্যাকসিনে উৎসাহ বাড়ল স্বাস্থ্যকর্মীদের

বিজ্ঞাপন

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ জানুয়ারি : সারা দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল ২৪ শে মার্চ, ২০২০। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রথম করোনা সংক্রমণ ৩০ শে মার্চ, ২০২০। সংক্রমিত হয়েছিলেন, ঘাটাল মহকুমার দাসপুর- ১ নং ব্লকের, নন্দনপুর- ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিজামপুরের যুবক, পেশায় স্বর্ণশিল্পী গণেশ চন্দ্র জানা। তারপর, ধাপে ধাপে করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে এ জেলাতেও। মে মাস থেকে প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। সংখ্যাটা এক থেকে একাধিক, প্রতিদিনই বেড়েছে। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা শিখরে পৌঁছয়। অবশেষে, কমতে কমতে তা ‘শূণ্যে’ ঠেকেছে! জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের করোনা রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২২ শে জানুয়ারি ৫০৪ জনের টেস্ট হয়েছিল, পজিটিভ এসেছিল মাত্র ১ জনের এবং গত ২৩ শে জানুয়ারি ৪৪২ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল, একজনেরও রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি! ‘দেশনায়ক’ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’র ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী’তেই যেন কাঙ্ক্ষিত সেই সুখবর এল মেদিনীপুরে (পশ্চিম)। আরও একটি উল্লেখযোগ্য খবর হল, এই মুহূর্তে (২৪ শে জানুয়ারির রিপোর্ট অনুযায়ী) জেলার ৪ টি করোনা হাসপাতালই (শালবনী, ঘাটাল, খড়্গপুর এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল) ‘রোগী শূণ্য’, অর্থাৎ করোনা হাসপাতালে একজনও রোগী ভর্তি নেই। শুধুমাত্র হোম আইশোলেশনে থাকা স্বল্প উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্ত আছেন ১০০ জনের কাছাকাছি!

thebengalpost.in
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ গত ১৬ ই জানুয়ারি ভ্যাকসিন নিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিমাই চন্দ্র মন্ডল :

বিজ্ঞাপন

[ আরও পড়ুন -   কালীপুজোর আগেই সুখবর! সংক্রমণ কমল পশ্চিম মেদিনীপুরে, গত দু'দিনে সংক্রমিত মাত্র ১৮১ জন, মেদিনীপুরে ৩১, খড়্গপুরে ২৬ ]

এদিকে, করোনা ভ্যাকসিনেশন বা টিকাকরণ চলছে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে। প্রথম কয়েকদিনের ভীতি কাটিয়ে ভ্যাকসিন নিতে এগিয়ে আসছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা। এখনও পর্যন্ত (২৪ শে জানুয়ারি পর্যন্ত) জেলায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২৯৬৬ জন। ১৬ ই জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ভ্যাকসিনেশন হয়েছে মোট ৪ দিন। এই চারদিনে ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা ছিল প্রায় ৫,০০০ জনের। কাজেই প্রথম তিনদিনের তুলনায় চতুর্থ দিনে ভ্যাকসিন নেওয়ার হার বেড়েছে অনেকটাই! শতাংশের বিচারে প্রায় ৬০ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে, প্রথম দফায় শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেই প্রায় ২৬,০০০ জনের ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা ১৬ ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে। এরপর, পুলিশ, অন্যান্য সরকারি দপ্তর সহ আরও প্রায় ২১,০০০ জনের নাম করোনা ভ্যাকসিনের জন্য ইতিমধ্যে নথিভুক্ত হয়েছে। এই ৪৭,০০০ (৪৭,৫৫৭) জন নথিভুক্ত করোনা যোদ্ধার মধ্যে অবশ্য এখনও পর্যন্ত (২৪ শে জানুয়ারি পর্যন্ত) ২৫,১৭২ জনের নাম অনুমোদিত (Approved) হয়েছে Co-WIN অ্যাপে। বাকি, ২২,৩৮৫ জনের নাম অনুমোদনের অপেক্ষায় (Pending) আছ। মনে করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারি ও মার্চের মধ্যেই এই ৪৭,০০০ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে যাঁরা ইচ্ছুক, তাঁদের সকলেরই ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তারপর, শুরু হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভ্যাকসিনেশন। উল্লেখ্য যে, জেলায় ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত একজনের মধ্যেও শারীরিক জটিলতা বা বিশেষ কোনও অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়নি,‌ শুধুমাত্র জ্বর বা সামান্য অ্যালার্জিক সমস্যা ছাড়া।

[ আরও পড়ুন -   বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা সহ গত দু'দিনে মেদিনীপুর শহরে সংক্রমিত ৩৯, ভাবাচ্ছে পরিবার সংক্রমণ! খড়্গপুরে ২৮, জেলায় ১৪৯ জন, মোট মৃত্যু সংখ্যা ২০০ ]