দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ১৩ অক্টোবর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৭ জন। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী রবিবার সংক্রমিত হয়েছিলেন ১১৪ জন, অপরদিকে সোমবার সংক্রমিত হয়েছেন ১৪৭ জন! এর মধ্যে, রবিবার মেদিনীপুর শহরে সংক্রমিত হয়েছিলেন মাত্র ১১ জন। পুজোর বাজারে মানুষের ঢল নামার পর, সোমবার তা বেড়ে হয়েছে একধাক্কায় ৩২! তবে, এখনো কোনো বিশেষজ্ঞই দায়িত্ব নিয়ে বলেননি বা বলতে পারবেন না সংক্রমণ বৃদ্ধি পুজোর বাজারের জন্যই কিনা! যদিও, সারা রাজ্য জুড়ে গত এক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে চলায় বিশেষজ্ঞরা সতর্কবাণী করেছেন, “পুজোর পর আসতে চলেছে করোনার ঢেউ বা সুনামি!” মেদিনীপুর শহরের ক্ষেত্রেও এটুকু বলাই যায়, গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণ অনেকটাই কমেছিল। শুক্রবার থেকে পুজোর বাজারে মানুষের ঢল নেমেছে, অর্থাৎ বাজার চাঙ্গা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য এই খবর অত্যন্ত সুখপ্রদ বা আনন্দের; তবে, সোমবারের করোনা সংক্রমণ একই সাথে আশঙ্কার বার্তাও বয়ে এনেছে। তাই, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে পুজোর কেনাকাটা করা উচিত, সঙ্গে অবশ্যই রাখা উচিত স্যানিটাইজার, বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

রবিবার মেদিনীপুর শহরের চিড়িমারসই, বিধাননগর, সুকান্তপল্লী, পুলিশ লাইন, হাতারমাঠ, অশোকনগর ও নজরগঞ্জে ১ জন করে এবং কুইকোটাতে এক দম্পতি (৩৫ ও ৩১) সহ মোট ৯ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। শহরতলীর ২ জন সহ মেদিনীপুরে রবিবার ১১ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবারই করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা। যিনি একটানা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। তাই, শুধু পুজোর বাজার নয়, প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞদের উচিত রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলির উপরও নজরদারি চালানো, দাবি সচেতন নাগরিকদের। অপরদিকে, ১২ অক্টোবর, সোমবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনা সংক্রমিতের তালিকায় সবথেকে বড় নাম, মেদিনীপুর সদর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (BDO- Block Development Officer) ফারহানাজ খানম (Farhanaz Khanam)। সদর ব্লকের বিডিও ফারহানাজ খানম (35 F) গত ১০ অক্টোবর নমুনা দিয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে আয়ুশ হাসপাতালে। গতকাল রাতে (১২ অক্টোবর), তাঁর আরটি-পিসিআর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ বিডিও ম্যাডামের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের রিপোর্ট পজিটিভ আসায়, সেইসময়ও তিনি করোনা রিপোর্ট করিয়েছিলেন। রিপোর্ট এসেছিল ‘নেগেটিভ’। এবার অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে, তিনি স্বল্প উপসর্গযুক্ত বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, বিডিও ম্যাডাম ছাড়াও সোমবার মেদিনীপুর শহর ও শহরতলীতে আরো ৩১ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই শহরের নজরগঞ্জ এলাকায় ধারাবাহিকভাবে সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধীরে ধীরে ওই এলাকায় যে গোষ্ঠী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের অভিমত ছাড়াও তা বলা যেতেই পারে। গতকালও এই এলাকায় দুটি ভিন্ন পরিবারের মোট ৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এই তালিকায় ৬ বছরের এক শিশুকন্যাও আছে। আছেন, তার বাবা (৩৬) এবং মা (২৮)ও। অপরজন, ওই এলাকার এক যুবক (৩৪)। একই অবস্থা রাঙামাটি’রও! এদিনও দু’জনের করোনা রিপোর্ট (54M, 34M) পজিটিভ এসেছে। গোষ্ঠী সংক্রমণের আরেক এলাকা ধর্মাতেও এক দম্পতির (৪২ ও ৩৩) করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। হবিবপুরেও তাই (35 M, 22 F), সংক্রমিত একই পরিবারের ২ জন। মীরবাজারে এক বৃদ্ধ দম্পতির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে (৫৪ ও ৪৭)। অপরদিকে, পুলিশ লাইন, পাটনাবাজার, ক্ষুদিরামনগর, খাপ্রেলবাজার, কুইকোটা প্রভৃতি এলাকায় ১ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। গুড়গুড়িপাল সহ শহর ও শহরতলীতে আরো ১১ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন দু’জনের রিপোর্ট পজিটিভ সহ শহর ও শহরতলীতে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২।
***পরবর্তী প্রতিবেদনে নজর রাখুন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সার্বিক করোনা পরিস্থিতি জানার জন্য…. নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে The Bengal Post ফেসবুক পেজে লাইক করুন অথবা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রবেশ করুন।





