দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ২০ এপ্রিল: করোনার ভয়ঙ্কর দাপটের মধ্যেই দেশ জুড়ে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে! ভ্যাকসিনের অভাব পশ্চিমবঙ্গ সহ প্রতিটি রাজ্যেই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ভ্যাকসিন নিতে না পেরে গত কয়েকদিনে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে ৪৫ উর্ধ্ব মানুষজনকে। এই অবস্থায় কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে কয়েকলক্ষ ভ্যাকসিনের ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে। তারপরই সোমবার জেলায় ২৫ হাজার কোভিশিল্ড পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে জেলা স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে। তার আগে গত ২-৩ দিন ১০-১৫ হাজার করে পাঠানো হচ্ছিল। আপাতত ২-১ দিন ভ্যাকসানের অভাব মিটবে ঠিকই, কিন্তু জোগান না থাকায় ফের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও, স্বাস্থ্য কর্তারা আশা করছেন, ২-১ দিনের মধ্যে আবারও ভ্যাকসিন পাঠানো হতে পারে।

Whatsapp Group এ

এদিকে, গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ১৮ বছর বয়স হলেই নেওয়া যাবে কোভিড টিকা। ১ মে থেকেই শুরু হবে টিকাকরণ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি বলেন, ভারতের বেশিরভাগ মানুষকে যাতে অল্প সময়ের মধ্যে টিকা দেওয়া যায়, তার জন্য গত এক বছর ধরেই চেষ্টা করে চলেছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই রেকর্ড গতিতে এগিয়েছে দেশ। তবে মোদীর কথায়, “আমরা আগামী দিনেও এ ব্যাপারে আরও দ্রুত গতিতে কাজ করব।” সোমবারের পদক্ষেপকে ভারতের টিকাকরণ প্রক্রিয়ার ‘তৃতীয় পর্যায়’ বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। উল্লেখ্য যে, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে দেশজুড়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়া। প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের টিকা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ এপ্রিল থেকে টিকা নেওয়ার সুবিধা অবারিত করা হয় ৪৫ উর্ধ্ব দেশবাসীদের জন্যও। কেন্দ্র জানিয়েছে, তৃতীয় পর্যায়ে টিকা নিতে পারবেন ১৮ উত্তীর্ণ হয়েছেন এমন সব দেশবাসী। তবে, তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় প্রতিষেধকের দাম, মজুতকরণ, কাদের আগে দেওয়া হবে এবং কীভাবে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেই।

এদিকে, ভ্যাকসিনের তো উৎপাদন কম! এই অবস্থায়, টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অর্থ প্রদান করেছে কেন্দ্র। এদিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দেশি ও বিদেশি সংস্থাকেও এই উৎপাদনে অংশ নিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে তাদের মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ পাঠাতে বলা হবে কেন্দ্রকে। বাকি ৫০ শতাংশ খোলা বাজারে বিক্রি করা যাবে এবং রাজ্য সরকারগুলিকেও পাঠানো যাবে। সংক্রমণের হার ও টিকাকরণের হার বিচার করে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে টিকা সরবরাহ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে রাজ্য এবং খোলা বাজারে সরবরাহের টিকার দাম কত হতে চলেছে, তা ঘোষণা করতে হবে ১ মে’র আগেই। সোমবার কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা, স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪৫ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের টিকাকরণ চলবে আগের মতোই। কো-উইন (Co-win) অ্যাপের মাধ্যমে সমস্ত নিয়ম মেনেই টিকাকরণ হবে। তবে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা, স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪৫ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।