দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ৩০ জানুয়ারি: শুভেন্দু’র জবাবে আসরে কি এবার আনিসুর? আজ মেদিনীপুর শহর জুড়ে পড়া পোস্টারে তেমন ইঙ্গিতই মিলছে। পাঁশকুড়ার একসময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা (পরবর্তী সময়ে, বিজেপিতে যোগদান করেছেন) তথা পাঁশকুড়া পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান এখনও জেলবন্দী (কুরবান শাহ হত্যা মামলায়)। তবে, সম্প্রতি তিনি উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। তার আগেই মেদিনীপুর শহর জুড়ে, তাঁকে স্বাগত জানিয়ে, তাঁর ছবি সহ কেউ বা কারা পোস্টার দিয়েছে। তাতে লেখা- “মীরজাফর সাবধান দাদা আসছে”! যদিও, পোস্টারে মীরজাফর বানান ‘মির্জাফর’ হয়েছে এবং পোস্টারে উল্লেখ নেই কোনও ব্যক্তি-নাম বা সংগঠনের নাম। তবে, একথা সর্বজনবিদিত যে, আনিসুর রহমানের এক এবং একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পূর্ব মেদিনীপুরের আর এক জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর জন্যই আনিসুর বিজেপিতে গিয়েছিলেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানান আনিসুর। এদিকে, আনিসুর যখন ‘জেলবন্দী’, তার মধ্যেই ‘ঘটা করে’ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন মেদিনীপুরের জননেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু। স্বভাবতই, তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ আনিসুর রহমানের যে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা, একথা বলার জন্য, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই! আর রাজনৈতিক মহলের মতে, একদা শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনেই (সমালোচকেরা বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর) জেলে যাওয়া আনিসুর যে এবার সেই শাসকদলের সহায়তায়, খুব শীঘ্রই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন, তাও একপ্রকার অনুমান করাই যায়! খুব সম্ভবত, আগামী সপ্তাহের শুরুতেই তা হতে চলেছে। তবে, তার আগেই আনিসুর রহমানের ছবি সহ পোষ্টার পড়লো, জেলা শহর মেদিনীপুরে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের পোস্টার লক্ষ্য করা গেল আজ।


গত বছরের অর্থাৎ ২০২০ র মার্চ-এপ্রিল থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সচেতন দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অক্টোবরের শুরু থেকেই বেসুরো হয়েছেন! এই জল্পনার মধ্যেই, ২০২০ র ১৩ ই অক্টোবর, জেলবন্দী বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়- “প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।” সঙ্গে নিজের বাইকে চাপা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি! জল্পনা শুরু হয় তখন থেকেই। এরপর, শুভেন্দু পাকাপাকি ভাবে বিজেপিতে যান, মেদিনীপুরের শাহী সভায়, ১৯ শে ডিসেম্বর। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারি মাসে নন্দীগ্রামের সভা থেকে বলেন, “ওরা ছেলেটাকে (আনিসুর রহমানকে) জেলে ভরে রেখে দিয়েছে!” বেশ! দুইয়ে দুইয়ে ‘পাঁচ’ করে নিল সংবাদমাধ্যম থেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা! আর এর মধ্যেই, বিতর্কিত পোস্টার মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলের অদূরে জেলা শহর জুড়ে। অখন্ড মেদিনীপুরের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু মেদিনীপুর শহর থেকেই যে শুরু হতে চলেছে নতুন এক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতার ইতিকথা, তা বলাই বাহুল্য!








