দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি: কলেজ আর একাদশ-দ্বাদশ দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে চলেছে কিছু ক্লাস। ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ক্লাস খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব রাজ্যের উপরই ন্যস্ত (অর্পণ) করেছে কেন্দ্র। তাই, ধীরে এগোতে চাইছে রাজ্য সরকারও। বিদ্যালয় খোলার পর একজন ছাত্রও যদি সংক্রমিত হয়, নির্বাচনের আগে বিরোধীরা যে ছেড়ে কথা বলবেনা, তা বলাই বাহুল্য! কারণ, এ হল বঙ্গের রাজনীতি, ‘যেতেও কাটবে আসতেও কাটবে!’ তবে, সমস্ত রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে, এবার যে বিদ্যালয় গুলি খুলে দেওয়াই শ্রেয়, রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষাবিদ থেকে অভিভাবক, সকলেই একবাক্যে স্বীকার করছেন। প্রয়োজনে, ধাপে ধাপে শিক্ষকদের ভ্যাকসিনেশন বা টিকাকরণ শুরু হোক, এই দাবিও তুলছেন তাঁরা। কারণ, হু (WHO)’র নির্দেশিকা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিম্নে অর্থাৎ দ্বাদশ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ভ্যাকসিন দেওয়া আপাতত নিষেধ আছে। সেক্ষেত্রে, প্রথমে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা নবম থেকে দ্বাদশ এর ক্লাস কিছু কিছু করে অর্থাৎ রোটেশন বা রোস্টার অনুযায়ী শুরু করার পক্ষেই এই মুহূর্তে সওয়াল করছেন সচেতন নাগরিক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা। ইতিমধ্যে, রোস্টার মেনে বা পালা করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে স্কলার বা গবেষক ছাত্র-ছাত্রীদেরও। এক্ষেত্রে, ফেব্রুয়ারি থেকে রোস্টার বা রোটেশন অনুযায়ী শুরু করে, এর ফলাফল দেখে মার্চে পূর্ণ উদ্যমে শুরু করার কথা ভাবছে শিক্ষা দপ্তরও। যদিও, মার্চ-এপ্রিলে ভোট শুরু হলে, ক্লাসের ক্ষেত্রে ফের কিছুটা বাধা আসবে। তা সত্ত্বেও শুরুটা হয়ে যাক, চাইছেন বেশিরভাগ অভিভাবক-অভিভাবিকা থেকে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন ও শিক্ষানুরাগীরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দিনকয়েক আগেই জানিয়েছিলেন, “বিদ্যালয়গুলি ইতিমধ্যে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। আবারও সেই কাজ চলছে। আমরা সমস্ত দিক বিবেচনা করে, স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।” এরপরই, শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে তথা নবান্ন তে প্রস্তাব পাঠানো হয় বলে জানা যায়। গতকাল এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “একাদশ ও দ্বাদশের প্র্যাকটিক্যাল (মার্চে) পরীক্ষার আগে কিছু ক্লাস শুরু করা যায় কিনা এবং ফেব্রুয়ারি থেকে কলেজের ক্লাস শুরু করা যায় কিনা, উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। একই সাথে, নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত, করোনা বিধিনিষেধ মেনে পঠন পাঠন চালু করা যায় কিনা, ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে, উঁচু ক্লাস দিয়েই প্রথমে শুরু করা হবে।” এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, আগামী ১০ মার্চ থেকে ৩১ শে মার্চের মধ্যে একাদশ ও দ্বাদশের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাগুলি সম্পন্ন করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে তা সংসদে পাঠানোর নির্দেশিকা জারি করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার আগে, বিদ্যালয়ে এসে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে কিছু দিন অন্তত হাতে-কলমে অনুশীলন করতে পারে, সেই জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে, এখনও তা বিবেচনার পর্যায়ে আছে। অপরদিকে, মার্চ-এপ্রিলে নির্বাচনের আগে যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক (প্রথম থেকে অষ্টম) অফলাইনে ক্লাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ, তা শিক্ষামন্ত্রী’র ইঙ্গিত থেকেই স্পষ্ট। সেক্ষেত্রে অনলাইনই আপাতত ভরসা মে’র মাঝামাঝি অবধি! নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হলে (যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন), হয়তো পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। তবে, বাংলার বুকে এ প্রশ্ন কিন্তু অবশ্যই ঘোরাঘুরি করবে, পার্কে-পিকনিকে-মেলায়-খেলায় মাস্ক না পরে যদি শিশু-কিশোররা যোগ দিতে পারে, তাহলে মাস্ক পরে, রোটেশন বা রোস্টার অনুযায়ী স্কুলে আসলে ক্ষতিটা কোথায়!