দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ৭ ডিসেম্বর: কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিলের প্রতিবাদে সারা ভারতজুড়ে চলা কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ (৭ ডিসেম্বর) মেদিনীপুর শহরের ঐতিহ্যমণ্ডিত কলেজ-কলেজিয়েট ময়দানে অনুষ্ঠিত দলীয় জনসভায় হাজির হয়ে তিনি এই সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “আমরা বনধের রাজনীতি সমর্থন করিনা। তবে, আগামীকালের কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করছি।” নতুন ধানের গোছা হাতে নিয়ে তিনি মঞ্চ থেকে শপথ করেন, “কৃষকদের আন্দোলনে পাশে ছিলাম, আছি, থাকব।” একইসঙ্গে তিনি বিজেপির উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, কৃষি বিল প্রত্যাহার করো, নয়তো সরকার ছাড়ো। এদিন বক্তব্য শুরুর সময়, মঞ্চে সবজির মালা ঝুলিয়ে কৃষি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। কৃষক ও কৃষকদের আন্দোলনের সমর্থনে এবং কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল থেকে ব্লকে ব্লকে ধরনা কর্মসূচির ঘোষণা করার সাথে সাথে, আগামী ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান-বিক্ষোভের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করলেও, এদিন মুখ ফসকে হলেও তিনি বলে ফেলেন, “সিপিআইএম রক্ষক, বিজেপি ভক্ষক, কংগ্রেস তক্ষক!” শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, “অনেক বামপন্থী নেতা আছে, তাঁরা বিজেপির বিরোধিতা করেন। আমি তাঁদের স্যালুট জানাই।” বিজেপিকে ভারতের মাটি থেকে উৎখাত করার সময় এসেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এদিনও তিনি “বহিরাগত” প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। “বাংলাকে গুজরাট বানাতে” দেবেন না বলেও তিনি আরও একবার হুঁশিয়ারি দেন। তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠে এভাবে বামপন্থীদের প্রশংসা শুনে, একদিকে যেমন বামপন্থীরাও মাথা চুলকোচ্ছেন, ঠিক তেমনই তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরাও দিদির মন্তব্যে হতভম্ব হয়ে গেছেন! তবে, রাজনীতিবিদেরা বলছেন, এ আসলে বিজেপির ভোট কাটতে সিপিআইএমের পালে হাওয়া দেওয়ার প্রচেষ্টা মাত্র! অথবা, এও হতে পারে, বিজেপি বিরোধী কিছু বামপন্থী নেতাকে দলে আনার চেষ্টা! এদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে, রাজ্যের নিজের অর্থে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আজ মেদিনীপুরের জনসভায় ঘোষণা করেন। মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেট মিটিং এ তা পাস হয়ে গেছে বলেও জানান। তিনি বলেন, ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। ২৫,০০০ ছেলে-মেয়ে কাজ পাবে। খড়্গপুরে গভীর সমুদ্রবন্দরের একটি ইউনিট করার কথাও তিনি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র’কে জানিয়েছেন বলে দাবি করেন। মূলত, লৌহ ইস্পাত রপ্তানী করা হবে এই গভীর সমুদ্র বন্দর দিয়ে। এর ফলে দুই মেদিনীপুরে উপকৃত হবে বলেও তিনি জানান।