দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ এপ্রিল: না, জীবনটা ‘ক্রিকেট’ নয়! অতিমারীর এই ভয়াবহতাকেও খেলার শিরোনামে চিহ্নিত করা যায়না। তবে, দেশ, রাজ্য ও জেলার এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে জীবনটাকে একটু ‘স্পোর্টিংলি’ নেওয়াই যায়! করোনা নামক এই প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একদিকে দরকার কড়া ডিফেন্স বা প্রতিরোধ (মাস্ক পরা, ঘরে থাকা, দূরত্ব বজায় রাখা), উপযুক্ত বা প্রপার প্ল্যানিং (সঠিক খাওয়া-দাওয়া, তরল পানীয় পান করা এবং বারবার হাত ধোওয়া) এবং পাল্টা আক্রমণ (এতসবের পরেও যদি সে ঘরে বা শরীরে প্রবেশ করে, আত্নবিশ্বাসের সঙ্গে মোকাবিলা করা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য দপ্তরের পরামর্শ মেনে চলা)। এর সঙ্গে তো ‘ভ্যাকসিন’ নামক বিকল্প আছেই! তবে, যেহেতু এখনও সে পুরোদমে ময়দানে নামেনি (সবাই ভ্যাকসিন পাননি), তাই তার একটু সচেতন ভাবে খেলতেই হবে “এই খেলা, ভয়ঙ্কর এই খেলা!” আশা করা যায়, ওই ছোট্ট জীবাণু নয়, শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব-ই জয়লাভ করবে।

Whatsapp Group এ
এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের বুধবার দুপুরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত চব্বিশ ঘণ্টায় জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪৪৪ জন। ফলে, গত ৩ দিনে জেলায় মোট করোনা সংক্রমিত হলেন- ১৩৪৬ (৩২৪, ৫৭৮, ৪৪৪) জন! আর গত ৭ দিন বা এক সপ্তাহে ২২৮০ (২৩৬, ১২১, ৩৩১, ২৪৬, ৩২৪, ৫৭৮ ও ৪৪৪) জন। সংক্রমণের এই উর্ধ্বমুখি হার নিঃসন্দেহে আশঙ্কাজনক! করোনা’র এই মারকাটারি ইনিংসে, ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আসার পর সংক্রমণের নিরীখে এই প্রথম ‘হাফ সেঞ্চুরি’ করল ডেবরা ব্লক। গত চব্বিশ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৫১ জন। এর, মধ্যে শুধু পশং এলাকাতেই ১৯ জন। তাও আবার ওই এলাকার ৩ টি পরিবারে ১৭ (৫, ৪, ৮) জন! এছাড়াও, পশ্চিম বেগুনিতে ২ জন, ঘোলাইতে ২ জন সাকিরদাতে ২ জন, বালিচকে ২ জন, ডিঙ্গলে ২ জন, মাড়তলায় ২ জন, ডেবরায় ৩ জন এবং ভোগপুর, চকবসু, আলিসাগেড়িয়া, বাঁশদা, হাতিবেড়িয়া, জালিমন্দা, চকশ্যামপুর, হামিরপুর, শীতলন্দাপুর, বড়গড়, গোলগ্রাম, পদিমা, ডুঁয়া, বাকলসা, চকলালপুর, লোয়াদা ও রাধামোহনপুরে ১ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়।
পিংলাতে ১০ (জলচক ২, বিলুরিয়া, পিন্ডরুই, মধ্যমবাড় ২, ছোটোখালিনা ২,তাবুয়া, রাধাকৃষ্ণপুর) জধ এবং সবংয়ে ২ (কসবা, সবং) জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।

অন্যদিকে, সংক্রমণের প্রবল ঢেউয়ে গত চব্বিশ ঘণ্টায় জঙ্গলমহল শালবনী’তে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২৬ জন (বিআরবি ৮, চকতারিনী ১, ভাউদি, ঢেঙাশোল, বড় পাথরকুমকুমি, সুন্দরা সৈয়দপুর ২, শালবনী ১২)। এছাড়াও, গোয়ালতোড়ে (গড়বেতা ২)- ১৭ (শালবনী ৯, গোয়ালতোড় ৫, বুলানপুর, কামারগোড়া, চ্যাংশোল) জন, গড়বেতায় (গড়বেতা ১)- ৮ জন এবং চন্দ্রকোনা রোডে (গড়বেতা ৩)- ১ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও, কেশপুরে ২ (আনন্দপুর, কেশপুর) জন এবং
ঘাটাল মহকুমায় ৭৫ (দাসপুর- ২৫, চন্দ্রকোনা ও ক্ষীরপাই- ২০, ঘাটাল-২৯) জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহর ও সদর এলাকায় মোট ৯০ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে, জেলা শহরের হবিবপুর, রাঙামাটি, শরৎপল্লী, বিধাননগর, তাঁতিগেড়িয়ায় পরিবার সংক্রমণ থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও, পালবাড়ি, জগন্নাথমন্দির, আবাস, কুইকোটা সহ কোতোয়ালী থানার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। গুড়গুড়িপাল থানার গোপগড়েও করোনা সংক্রমিতের সন্ধান মিলেছে। অন্যদিকে, খড়্গপুরে নতুন করে ১২১ (রেল ৫৫, আআইটি ৪, খড়্গপুর গ্রামীণ ১০, খড়্গপুর শহর ৫২) জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও, খড়্গপুর মহকুমার দাঁতনে ৬ জন ও বেলদায় ৮ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১ জনের (মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের করোনা বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন)!
