দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ অক্টোবর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্যতম অভিজ্ঞ নেতা তথা জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি জহর পাল (৬৬) করোনা সংক্রমিত হলেন। নিউমোনিয়া’র প্রভাব থাকায় এবং প্রবল শ্বাসকষ্ট থাকায়, কোনোরকম ঝুঁকি নিতে চাননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী’র সক্রিয় সহযোগিতায় তাঁকে কলকাতার এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে রাত্রি ১ টা (১৬ অক্টোবর) নাগাদ। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে, জেলা তৃণমূল তথা খড়্গপুরের তৃণমূল নেতৃবৃন্দ যখন ব্যস্ত মহামিছিল এবং পুজো উদ্বোধন’কে কেন্দ্র করে, ঠিক সেই সময়ই জ্বর, বুকে ব্যাথা এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেদিনীপুর শহরের বেসরকারি হাসপাতালে আসেন জহর বাবু। সঙ্গে ছিলেন, তাঁর ছেলে তথা খড়্গপুর শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অসিত পাল, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি সহ গুটিকয়েক তৃণমূল নেতা-কর্মী এবং তাঁর প্রিয়জন ও ঘনিষ্ঠরা। বেসরকারি হাসপাতালের এমার্জেন্সি’তে তাঁকে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা নিউমোনিয়া এবং কোভিডের উপসর্গ খুঁজে পান। এরপর তাঁর কোভিড টেস্ট হলে, কয়েকঘন্টা পর রিপোর্ট (ট্রুনেট পদ্ধতিতে ব Truenat Test) আসে পজিটিভ! এরপরই, পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ জনেরা রীতিমতো দুঃশ্চিন্তায় পড়েন! তাঁরা পরিবহন মন্ত্রী তথা সদ্য করোনা মুক্ত শুভেন্দু অধিকারী’র সহযোগিতা ও পরামর্শ চান। তাঁদের আশ্বস্ত করে, পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা জহর বাবু’কে কলকাতার এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। শুধু তাই নয়, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো বিষয়টিই তিনি তদারকি করেন বলে জানা যায়, জেলা তৃণমূলের অপর নেতা তথা জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি’র মাধ্যমে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জেলার রাজনীতিতে খড়্গপুর পৌরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান তথা বিদায়ী কাউন্সিলর জহর বাবু বরাবরই শুভেন্দু অধিকারী’র ঘনিষ্ঠ অনুগামী হিসেবে পরিচিত। রমাপ্রসাদ গিরিও শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এবং ‘দাদার অনুগামী’ হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
জহর বাবু’র ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই তিনি জ্বর ভুগছিলেন। সম্প্রতি, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ষাটোর্ধ্ব এই তৃণমূল নেতা’কে মেদিনীপুর শহরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর, সন্ধ্যা নাগাদ তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বৃহস্পতিবার রাত্রি ১০ টা নাগাদ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী’র ব্যবস্থাপনায় তাঁকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কলকাতার দিকে রওনা হয়ে যান। রাত্রি ১ টা নাগাদ বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয় বলে জানা যায়। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব একটা স্থিতিশীল নয় বলেই জানা গেছে। কোভিডের সবথেকে কমন (বা সাধারণ) এবং মারাত্মক উপসর্গ ‘নিউমোনিয়া’ গ্রাস করায়, তাঁকে নিয়ে যে দুঃশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে, তা ঘনিষ্ঠজনেরাই জানাচ্ছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা পর্বের শুরু’র দিকে জহর বাবু বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজকর্ম থেকে শুরু করে রাস্তায় নেমে মাস্ক বিতরণ সবকিছুই করেছেন। কিন্তু, সম্প্রতি কিছুদিন হল, সমস্ত ধরনের কর্মসূচি থেকে তিনি সরে এসেছিলেন, শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে। তবে, সক্রিয় ছিলেন তাঁর ছেলে তথা সদ্য (১৫ সেপ্টেম্বর) যুব তৃণমূলের শহর সভাপতি নির্বাচিত হওয়া অসিত পাল।

অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সম্পাদক তথা অন্ধ্রা ইয়ং মেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট (সভাপতি) সূর্যপ্রকাশ রাও (৬৩) এর করোনা রিপোর্ট মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাতে পজিটিভ এসেছে বলে জানা গেছে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে। খড়্গপুরের রাজনৈতিক জগতে সূর্য প্রকাশ অত্যন্ত সুপরিচিত নাম। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তাঁর অনুগামী তথা দলীয় কর্মী সমর্থকেরা।
