দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ২৬ এপ্রিল: করোনা সংক্রমণে একের পর এক ‘হাফ সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়ে চলেছে জেলা শহর মেদিনীপুর! গত এক সপ্তাহে শুধু মেদিনীপুর পৌরসভা এলাকাতেই করোনা সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় ২৬০ জন। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার, শহরের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের জীবাণু! ইতিমধ্যে ২-১ টি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আর এই পরিস্থিতিতে, শহরের অরবিন্দ নগরের সচেতন বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা গেল, সংক্রমণ রুখে দেওয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। শহরের যে ক’টি এলাকায় গত কয়েকদিনে সংক্রমণ বেড়েছে আশঙ্কা জনক ভাবে, জর্জকোট-অরবিন্দনগর তার মধ্যে অন্যতম। তাই, অরবিন্দ নগরের বাসিন্দা কার্তিক চন্দ্র ধর রবিবার সকাল থেকে জীবাণুনাশক স্প্রে নিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেলেন। এলাকার রাস্তা ঘাট, প্রতিটি বাড়ি স্যানিটাইজ করলেন একক প্রচেষ্টায়। তাঁর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন ওয়ার্ডের কয়েকজন বাসিন্দাও। কার্তিক বাবু জানালেন, “সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। তাই, আর প্রশাসনের ভরসায় না থেকে, ঘর-বাড়ি-রাস্তা-ঘাট স্যানিটাইজ করার উদ্যোগ নিলাম।” শুধু তাই নয়, এলাকার কারুর যদি কোভিড ধরা পড়ে, তবে প্রাথমিক চিকিৎসা করার মতো ওষুধ থেকে অক্সিজেন সবকিছুই মজুত রেখেছেন এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে। এমনকি, প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা করার মতো ডাক্তারের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছেন বাসিন্দারা। কার্তিক বাবু এমনটাই জানালেন রবিবার।


Whatsapp Group এ

এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের মধ্যে অন্যতম ষাটোর্ধ্ব দেবব্রত ঘোষ জানালেন, “হ্যাঁ, পৌর পরিষেবা বা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা। নিয়মিত সাফাই বা নালা-নর্দমা পরিষ্কার তো হচ্ছেই না, কোথাও কোথাও আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে! বারবার জানিয়েও ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের।” অত্যন্ত হতাশার সুরে দেবব্রত বাবু এও জানালেন, “ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের কার্যালয় হচ্ছে, তাই আজ দেড়-দু’ মাস হয়ে গেল, বাড়ির সামনের নর্দমার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, নিকাশি না হওয়ায় নোংরা জল জমে জমে, যত রকমের মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। আর, দুর্গন্ধের কথা তো ছেড়েই দিলাম! মাসখানেক আগে থেকে এসডিও তথা পৌর প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।” এলাকার আরেক বাসিন্দা বিকাশ রঞ্জন কাপড়ি জানালেন, “সামনেই নেতাজি নগর বস্তি। বস্তির যত নোংরা সব বাড়ির সামনে ফেলে যাচ্ছে। কুকুর-বিড়াল থেকে মশা-মাছির সমস্যা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে! বর্ষার সময় নালার জল উপচে রাস্তায় উঠে যায়।” এই পরিস্থিতিতে তাই আর প্রশাসনের উপর ভরসা না রেখে নিজেরাই কোভিডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন!












