দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ নভেম্বর: দশ লক্ষ টাকা দিতে না চাওয়ায় জ্বালিয়ে দেওয়া হল গাড়ি, মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল থেকেই হুমকি, “ইয়ে তো সির্ফ ট্রেলার দেখ রাহি হো, আগে আগে দেখো ক্যায়া হোতা হ্যায়!” মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দী আছেন খড়্গপুরের একসময়ের ‘ত্রাস’ হিসেবে পরিচিত শ্রীনু নাইডু হত্যার মূল আসামী শঙ্কর রাও। সেই জেলবন্দী অবস্থাতেই ফোন করে খড়্গপুরের এক ব্যবসায়ী’কে দশ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। আরো মারাত্মক অভিযোগ, ওই প্রোমোটার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায়, তাঁর বাড়িতে ঢুকে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল!
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর টাউন থানার অন্তর্গত মালঞ্চ এলাকার এক ব্যবসায়ী’র সাথে গতকাল (৩১ অক্টোবর) এমন ঘটনাই ঘটেছে। গতকাল (শনিবার) বিকেলে, এক দুষ্কৃতী হাতে বন্দুক নিয়ে বাড়ির পিছনের গেট দিয়ে ঢুকে, গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায় তাঁর মারুতি কার! গ্যারেজে থাকা স্কুটিতেও আগুন লেগে যায়। সাথে সাথেই দমকলে খবর দিলে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে দমকলকর্মীরা আগুন নেভায়। ওই ব্যবসায়ী বলেন, “গত শুক্রবার শঙ্কর রাও আমাকে জেল থেকে ফোন করেছিল। বলল ১০ লাখ টাকা দাও। না হলে তোমাকে যা করার করব! আমি বললাম কাউকে এক টাকাও দেবো না। যা করার আছে করে নাও। এরপর, গতকাল একজন আমার বাড়ির পেছনের দরজা ভেঙ্গে, হাতে বন্দুক নিয়ে ঢুকে আমার গাড়ির কাচ ভেঙ্গে, গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। টুপি ও মাস্ক পরে থাকার জন্য, জন্য ওই ব্যক্তিকে চেনা যায়নি। আমি ওই সময় ছাদে ছিলাম। গাড়িতে আগুন লাগার কথা আমার মেয়ে জানানো মাত্র, আমি উপর থেকে নিচে আসছিলাম। সেইসময় আবার শঙ্কর রাও আমাকে ফোন করে বলে, এটা ট্রেলার মাত্র। আগে অনেক কিছু বাকি আছে! আমি নিচে নেমে, দমকল ও থানায় জানালাম। দমকল আসতে আসতে অর্ধেকটা পুড়ে গেছে। থানা থেকে বড়বাবু এসে সবকিছু দেখে গেলেন। আজ আমি থানায় গিয়ে অভিযোগও জানিয়েছি। দুটো আলাদা নম্বর থেকে ফোন এসেছে। ওই নম্বরগুলো আমি থানায় দিয়ে এসেছি।”
এদিকে, এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, জেলবন্দি শঙ্কর রাও এর কাছে মোবাইল ফোন এলো কি করে! সেটাও আবার দুটো আলাদা নাম্বার যুক্ত। প্রশ্ন উঠছে, জেলের নজরদারি নিয়েও। এর আগেও এরকম একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি, সম্প্রতি এক জেলবন্দীর আত্মহত্যার বিষয় নিয়েও তোলপাড় হয়েছিল সংশ্লিষ্ট মহল। এবার, একজন টপ গ্রেডের আসামীর কাছে মোবাইল ফোন পৌঁছে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এনিয়ে জেল সুপার (জেল সুপারিনটেনডেন্ট- Jail Superintendent’)কে ফোন করা হলেও এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।